ধর্ম ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, তাওয়াফ ইত্যাদির জন্য অজু করতে হয়। অজুর পানির মাধ্যমে মানুষের শারীরিক ও আত্মিক উৎকর্ষতা লাভ হয়। শীতে অজু করার যেসব পুরস্কার রয়েছে তা জানলে মানুষ ইবাদাতে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন।

আল কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’ সুরা বাকারা, আয়াত ২২২)। যদি কোনো ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করে এবং উত্তমরূপে করে তার জন্য হাদিসেও অনেক ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। অজুর রয়েছে বহুবিধ উপকারিতা ও তাৎপর্য। এক. উত্তমরূপে অজু জান্নাতে যাওয়ার সহজ উপায়।

ওকবা ইবনে আমের (র.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলমান উত্তমরূপে অজু করে, এরপর দাঁড়িয়ে মন লাগিয়ে খুশু-খুজুর সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ পড়ে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়’। মুসলিম। দুই. অজু ইমানের অর্ধেক। অজুর মাধ্যমে মানুষ বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উভয় রকম পবিত্রতা অর্জন করতে পারে।

আরও পড়ুন: মিথ্যার পরিণাম নিয়ে যা বলছে ইসলাম

হজরত আবু মালেক হারেস ইবনে আসেম আশআরি (রহ.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘অজু ইমানের অর্ধেক। আলহামদুলিল্লাহ মিজানের পাল্লা পূর্ণ করে। সুবহানাল্লাহ ওয়াল আমদুলিল্লাহ উভয়টা পূর্ণ করে অথবা আসমান-জমিন ও এ দুয়ের মাঝে যা আছে সবই পূর্ণ করে।’ মুসলিম। তিন. অজু পাপ মোচনের মাধ্যম। অজুর মাধ্যমে ছোট ছোট গুনাহ সহজে মাফ হয়ে যায়।

হজরত ওসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে এবং তা উত্তমরূপে করে তার দেহ থেকে সমুদয় গুনাহ বের হয়ে যায়, এমনকি তার নখের ভিতর থেকেও।’ বুখারি। চার. কিয়ামতের দিন উত্তমরূপে অজুকারী ব্যক্তিকে চিনতে কোনো অসুবিধা হবে না। তার অজুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে জ্যোতি চমকাতে থাকবে।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে আহ্বান করা হবে অজুর চিহ্নের দরুন। তাদের চেহারা, হাত ও পা থেকে জ্যোতি চমকাতে থাকবে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে চায় সে যেন তাই করে।’ বুখারি। শীতে অজুর রয়েছে আরও বেশি ফজিলত। প্রচ- ঠান্ডার কারণে অজু করতে অনেক কষ্ট হয়। এ কষ্ট সহ্য করে একজন মুমিন বান্দা অজু করে। এটা তার পূর্ণাঙ্গ ইমানের আলামত। এতে এই বান্দার মর্তবা মহান আল্লাহর কাছে অনেক বেড়ে যায়। তার গুনাহও মাফ হয়।

আরও পড়ুন: জলজ প্রাণীর হালাল-হারামের বিধান সম্পর্কে কি বলছে ইসলাম?

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কাজের কথা বলব না, যাতে আল্লাহ তোমাদের পাপরাশি মিটিয়ে দেবেন এবং মর্যাদা সমুন্নত করবেন? সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রসুল! হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন, তা হলো অসুবিধা ও কষ্ট সত্ত্বেও পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদে আসার জন্য অধিক পদচারণ এবং এক নামাজের পর অন্য নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। জেনে রেখ! এটাই হচ্ছে রিবাত- প্রকৃত সীমান্ত প্রহরা।’ মুসলিম।

শীতে অজু করার যেসব পুরস্কার লেখাটির লিখেছেন জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাতের শিক্ষক। লেখাটি বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ