স্কোয়াশ পরিচিতি ও আধুনিক চাষাবাদ কলাকৌশল নিয়ে আজকের তৃতীয় পর্বের আয়োজনে থাকছে স্কোয়াশ পরিচিতি ও আধুনিক চাষাবাদ কলাকৌশল (পর্ব-৩) চারার বয়স ও চারা রোপণ।

স্কোয়াশ পরিচিতি ও আধুনিক চাষাবাদ কলাকৌশল (পর্ব-১) এর পর স্কোয়াশ পরিচিতি ও আধুনিক চাষাবাদ কলাকৌশল (পর্ব-২) আজ তৃতীয় পর্ব নিয়ে কৃষক ভাইদের জন্য লেখাটি লিখেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরফ উদ্দিন

চারার বয়স ও চারা রোপণ
বীজ গজানোর পর ১৬-১৭ দিন বয়সের চারা মাঠে লাগানোর জন্য উত্তম। মাঠে প্রস্তুত মাদাগুলোর মাটি ভালোভাবে ওলট-পালট কওে এক কোপ দিয়ে চারা লাগানোর জন্য জায়গা করে নিতে হবে। অতঃপর পলিব্যাগের ভাঁজ বরাবর ব্লেড দিয়ে কেটি পলিব্যাগ সরিয়ে মাটির দলাসহ চারাটি উক্ত জায়গায় লাগিয়ে চারপাশে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিতে হবে। চারা লাগানোর পর গর্তে পানি দিতে হবে।

পরবর্তী পরিচর্যা

সেচ দেওয়া: স্কোয়াস ফসল পানির প্রতি খুবই সংবেদনশীল। সেচ নালা দিয়ে প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। জমিতে কখনও সমস্ত জমি ভেজানো বা প্লাবন সেচ দেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র সেচ নালায় পানি দিয়ে আটকে রাখলে গাছ পানি টেনে নিবে। প্রয়োজনে সেচ নালা হতে ছোট কোন পাত্র দিয়ে কিছু পানি ঘাছের গোড়ায় দেওয়া যাব। শুষ্ক মৌসুমে ৫-৭ দিন অন্তর সেচ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।

মালচিং: প্রত্যেক সেচের পর হালকা খড়ের মালচ করে গাছের গোড়ার মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। আগাছা অনেক রোগের আবাস স্থল। এছাড়াও আগাছা খাদ্যোপদান ও রস শোষণ কওে নেয়। কাজেই চারা লাগানো থেকে শুরু কওে ফল সংগ্রহ পর্যন্ত জমি সবসময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ: ফলে মাছি পোকার আক্রমণ হতে পারে। এটি থেেেক ফসলকে রক্ষা করার জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদ এবং পরাগায়নের পর ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করে মাছি পোকা দমন করা যায়। এছাড়াও ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক নির্দেশিত মাত্রায় ১০-১২ দিন পরপর ব্যবহার করে এই পোকার আক্রমণ কমানো যায়। রোগবালাইয়ের আক্রমণ তেমনটি চোখে পড়ে না।

আরোও পড়ুন: পটলে মাছি পোকা দমনে কার্যকরী উপায়

বিশেষ পরিচর্যা: সাধারণত স্কোয়াশ উৎপাদনের জন্য ১৬-২৫০ সে.তাপমাত্রা ও শুষ্ক পরিবেশ সবচেয়ে উপযোগী। রাতের তাপমাত্রা ১৭-২১০ সে. এর কম বা বেশি হলে গাছের বৃদ্ধি ব্যহত হয়, ফুল ঝরে পড়ে ও ফলন কমে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে একবারেই ফলন হয় না। অক্টোবর মাসে বীজ বপন কওে নভেম্বরে লাগালে দেখা যায় যে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ হতে জানুয়ারী পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়, ফলে গাছের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। এজন্য গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধিও জন্য পলিথিন ছাউনি বা গ্লাস হাউসে গাছ লাগালে রাতে ভিতরের তাপমাত্রা বাহির অপেক্ষা বেশি থাকে।

ফসল সংগ্রহ: ফল পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে। তখনও ফলে সবুজ রঙ থাকবে এবং ফল মসৃন ও উজ্জল দেখাবে। নখ দিয়ে ফলের গায়ে চাপ দিলে নখ সহজেই ভিতরে ঢুকে যাবে।

এদেশে সবজির উৎপাদন বাড়াতে নতুন এই সুস্বাদু সবজি ফসলটি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখতে পারে এমনটিই প্রত্যাশা সকলের।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ