গোলাম মর্তুজা সেলিম, সিকৃবি প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: হেমন্তের মিষ্টি রোদের সকাল। ঢাক ঢোলে’র বাজনায় মুখরিত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) প্রাঙ্গন।

সবার মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা। কণ্ঠে জাতীয় সংগীত। শান্তির প্রতীক উড়িয়ে শান্তি কামনা। এমনই নানা আয়োজনে ‍সিকৃবি এক যুগ (১২তম) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এসময় জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় উত্তোলন করা হয়।

এরপর শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও রঙিন বেলুন উড়ানো হয়। সেখান থেকে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। নানা রঙে ও পোশাকে সজ্জিত শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার।

শোভাযাত্রা শেষে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোঃ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এবং প্রক্টর প্রফেসর ড. মৃতুঞ্জয় কুন্ডুর সঞ্চালনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার।

এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার মোঃ বদরুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. পীযুষ কান্তি সরকার, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক মোঃ আনিসুর রহমান, কর্মচারী সমিতির সভাপতি শাহ আলম সুরুক।

আলোচনা সভা শেষে জন্মদিনের কেককাটা হয় ও মিষ্টিবিতরণ হয়। মিলনায়তনে বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, দপ্তর প্রধানবৃন্দ, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এবং ক্যাম্পাসের প্রাণ সিকৃবির ৬ অনুষদের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তায় রঙিন আলপনা একেছে সিকৃবি আর্ট ক্লাব। উল্লেখ্য ২০০৬ সালের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ১২ বছর উত্তর পূর্বাঞ্চলসহ পুরো দেশের কৃষিসেবায় কাজ করছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

৬টি অনুষদ ও ৪৭ টি বিভাগের মাধ্যমে সাফল্যের সাথে একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ থেকে মাত্র ৫০ একর জায়গা নিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিঃক্যাম্পাস হিসেবে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ফেঞ্চুগঞ্জ-তামাবিল বাইপাস সড়ক সংলগ্ন খাদিম নগর এলাকায় ১২.৩ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত  সিকৃবির কৃষি অনুষদ এবং মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ থেকে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ৭টি করে ১৪টি ব্যাচ বের হয়েছে। এদিকে ভেটেরিনারি, এনিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সস অনুষদ থেকে ইতোমধ্যে ১৯টি ব্যাচ বেরিয়ে গেছে।

সম্প্রতি কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে বেরোলো ৫টি ব্যাচ এবং কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ থেকে আরো ৩টি ব্যাচ। গত ফেব্রুয়ারিতে সিকৃবির প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবর্তনে ১ হাজার ৭৩৩ জনকে স্নাতক, ৫১৫ জনকে মাস্টার্স সনদ ও ১ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে।