ছবি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা টার্গেট করেছি, এক কোটি মানুষকে আমরা স্পেশাল কার্ড দেবো। যেটা দিয়ে তারা ন্যায্যমূল্যে জিনিস কিনতে পারবেন। যে ৩৮ লাখকে আমরা টাকা দিচ্ছি তারা তো থাকবেই, তার বাইরে আরও এক কোটি লোককে দেবো। তাছাড়া ৫০ লাখ মানুষকে একটি কার্ড দেওয়া আছে, যার মাধ্যমে তারা মাত্র ১০ টাকায় চাল কিনতে পারছেন।”

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যখন পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তখন আমাদের খুব বেশি কিছু করার থাকে না। কিছু তো কম্প্রোমাইজ করতে হয়। কিন্তু রমজানে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে।

সরকারের কাছে যথেষ্ট খাদ্য মজুত আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‌‘আলহামদুলিল্লাহ, এখনো ১৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত আছে আমাদের। সেখানে কোনো অসুবিধা নাই।’

ফসল উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘কারো এতটুকু জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যে যা পারেন সেটাই উৎপাদন করেন। প্রত্যেক এলাকায় কিছু না কিছু উৎপাদন হবেই। সেটাই আমার লক্ষ্য। আমাদের যে খাদ্য চাহিদা আছে, সেটি যেন পূরণ করতে পারি।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কে নেতৃত্ব দেবেন- এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি যখন আমাদের সবাইকে সংলাপে ডাকলেন, গেলাম। কিন্তু বিএনপি যায়নি। তারা আসলে যাবেই বা কীভাবে। ক্ষমতায় গেলে কে তাদের প্রধানমন্ত্রী হবেন?

তিনি বলেন, একজন (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা খেয়ে সাজাপ্রাপ্ত। আরেকজন (তারেক রহমান) ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ আরও বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক।

বিএনপির তেমন কেউ নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এটা-সেটা উল্টাপাল্টা বলেই যাচ্ছে, বলেই যাবে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে জনগণ যেন ভালোমতো বাঁচতে পারে।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকা বাদে খুলনাসহ দেশব্যাপী আগামী ১৫ মার্চ থেকে নতুন নিয়মে শুরু হবে টিসিবির পণ্য বিক্রি। যেখানে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে পণ্য পাবেন নিম্ন আয়ের গ্রাহকরা। নিম্ন আয়ের প্রতি পরিবারের একজনকে এই কার্ড দেওয়া হবে।

আগামী ১৫ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত প্রথম ধাপে প্রতি কার্ডে একজন ভোক্তা একবার করে ২ কেজি সয়াবিন তেল, ২ কেজি মশুর ডাল, ২ কেজি চিনি ও ২ কেজি ছোলা কিনতে পারবেন। পণ্য বিক্রির দ্বিতীয় ধাপ চলবে ২৭ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।

পড়তে পারেন: ১৯০ টাকার সয়াবিন ১১০ টাকায় দিচ্ছে টিসিবি

অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা উল্লেখ করে খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফকির সাইফুল ইসলাম বলেন, যারা এ কার্ড পাওয়ার যোগ্য, তাদের খুঁজে বের করে করে দেওয়া হবে।

নিম্ন আয়ের মানুষেরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরা বলছেন, বিশেষ এ কার্ড না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। সবাই এ সুবিধা পাবেন না মন্তব্য করে তারা জানান, যদি সঠিকভাবে যাচাই- বাছাই করে কার্ড দেওয়া হয়, তাহলে গরিব মানুষের কিছুটা হলেও সাশ্রয় হবে। তবে এসব কার্ড তো মুখ চিনে দিচ্ছে, আমরা তো পাব না। এ কার্ড আমাদের পর্যন্ত আসছে না। অনেকেরই তো সামর্থ্য নেই কিনে খাওয়ার, যদি বিবেচনা করে মধ্যবিত্তদেরও দেয়, তাহলে ভালো হবে।

পড়তে পারেন: জেনে নিন এ সপ্তাহের টিসিবির পণ্যের বাজারদর

রমজান সামনে রেখে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্যই এ বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে খুলনা টিসিবির অফিস প্রধান রবিউল মোর্শেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনায় এক কোটি হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে এ পণ্য দেওয়া হবে।

প্রতিটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং প্রতিনিধিরা ফ্যামিলি কার্ডের লোকবল নির্ধারণ করবেন। এসব নির্ধারিত মানুষের মধ্যে এ পণ্য বিতরণ করা হবে।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ