কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু, বাকৃবি থেকে, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: শিশুসহ সববয়সিদের পুষ্টি চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়- বাকৃবিতে ‘মাছ ও সবজি’ কেক উদ্ভাবন একোয়াকালচার বিভাগের প্রফেসর ড. এম এ সালাম।
আজ রোববার (৭ জুলাই, ২০১৯) বিকালে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের গোল্ডেন জুবিলী হলে উদ্ভাবিত ‘মাছ ও সবজির কেক’ এর প্যানেল টেস্ট ও একোয়াপনিক্সের ওপর দুই দিনব্যাপী ট্রেনিং ও জাতীয় কর্মশালা’র সমাপনী এবং সার্টিফিকেট বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান।
একোয়াকালচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ জসিমউদ্দিন খান, মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন আহমদ এবং বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রউফ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান বলেন ‘মাছ ও সবজি কেক’ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এবং কাটামুক্ত হওয়ায় এর বাচ্চাদের কাছে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারে মাছের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে।
আজকের প্রশিক্ষণার্থীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে এ জ্ঞাণ কাজে লাগালে দেশ সমৃদ্ধ হবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এম এ সালাম বলেন, বাচ্চারা আজ টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখে দেখে চা, কফি, সফট ড্রিংস, চিপস, চকলেটসহ বিভিন্ন প্রকার ফাস্টফুডের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
দেশের মানুষ কাটাকুটি ও ধোয়া-বাছার ঝামেলায় দিন দিন মাছ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। তাই মাছ যতই পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও শরীরের জন্য প্রয়োজনী হোক না কেন নিউক্লিয়ার পরিবারের পক্ষে মাছ খাওয়া হয়ে ওঠে না।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় উচ্চ প্রযুক্তি’র কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন নিয়ে কর্মশালা সমাপ্ত
ফলে প্রান্তিক মৎস্য চাষিগণ তাদের মাছের পর্যাপ্ত বাজার মূল্য পাচ্ছেন না। অধিকন্তু বিশ্ববাজারে আমাদের দেশীয় মাছ রপ্তানি করতে না পারায় চাষিগণ মাছ চাষে উৎসাহ হারিয়ে অন্যান্য ফসলের চাষ করছেন বা মাছ চাষের খামার বন্ধ করে দিয়েছেন।
মাছের কেক সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, কেকটি শিশু, কিশোর ও আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবার যেমন পছন্দ হবে তেমনি পুষ্টি সমস্যারও সমাধান হবে। এই কেক যেমন বাসায় তৈরি করা যাবে তেমনি ফাস্টফুডের দোকানেও জনপ্রিয়তা পাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
এই কেকের মধ্যে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় যা যা থাকা উচিৎ যেমন শাক-সবজি, মাছ, ডিম, মাশরুম, স্প্রাউট, ক্যাপসিকাম, পনিরসহ বিভিন্ন মসলা ও রয়েছে। তাই এই কেক শিশু, কিশোর ও আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবার নাস্তাসহ মূখ্য খাবার হিসাবেও ব্যবহার করা যাবে।
তিনি বলেন, এই মাছের কেক তৈরীর পর একোয়াকালচার বিভাগের ফিস নিউট্রিসন গবেষনাগারে এর গুণগত মান পরীক্ষা করে নিম্ন লিখিত পুস্টি উপাদান সমুহ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম মাছের কেক এ পুষ্টি উপাদান সমূহ শতকরা উপস্থিতি, পানি ১০.৩৩ ভাগ, আমিষ ৪৮.৮৬ ভাগ স্নেহ/তেল ২৮.৪২ ভাগ শকর্রা ২.৪ ভাগ ছাই ৬.৩ ভাগ, ক্রড ফাইবার ৩.৬২ ভাগ এবং শক্তি (কিলো ক্যালরি) ৫৩৭.২ ভাগ।
উল্লেখ্য একোয়াপনিক্সের ওপর দুই দিনব্যাপী ট্রেনিং ও জাতীয় কর্মশালা গত ৬ জুলাই শুরু হয়। কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম। বাকৃবিতে ‘মাছ ও সবজি’ কেক উদ্ভাবন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দেশী বিদেশী ছাত্র-শিক্ষক-উদ্যোক্তাগণ অংশ গ্রহণ করেন।