অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: গত সপ্তাহে রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে।কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর দিয়ে উন্মুক্তভাবে রফতানি হলেও তা গত বছরের তুলনায় অনেক কম। রপ্তানি পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের অবস্থায় ফিরতে চায় ইউক্রেন।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্য চলছে, ২০২২-২৩ মৌসুমের এখন পর্যন্ত ইউক্রেন গত মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম খাদ্যশস্য রফতানি করেছে।

মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ টনে, ২০২১-২২ মৌসুমের একই সময় যা ছিল ২ কোটি ৬ লাখ টন। চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত দেশটি মোট ৫৪ লাখ টন গম, ৭৭ লাখ টন ভুট্টা ও ১২ লাখ টন যব রফতানি করেছে।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলার কারণে কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় দেশটি শুধু স্থল, রেল ও নদীবন্দর দিয়ে স্বল্প পরিমাণ শস্য রফতানি করতে সক্ষম হয়। যুদ্ধের আগে প্রতি মাসে দেশটি ৬০ লাখ টন শস্য রফতানি করলেও যুদ্ধের পর তা ১০ লাখ টনে নেমে আসে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা, শস্য রফতানি চুক্তি থেকে সরে গেলো রাশিয়া

আশঙ্কাজনক হারে কমতে পারে ইউক্রেনের শস্য উৎপাদন

বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাজারদর লাগামহীন হয়ে উঠছে

অবশেষে গম, সয়াবিন, ভুট্টার দাম কমলো

তবে জুলাইয়ের শেষ দিকে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এ চুক্তির আওতায় আবারো কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রফতানি শুরু করে ইউক্রেন। এরপর দেশটির রফতানি ব্যাপক বাড়তে শুরু করে। কিন্তু এখনো তা যুদ্ধপূর্ব প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারেনি।

 সরবরাহ সংকটের কারনে নিম্ন আয়ের ও খাদ্যনিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে আগামী বছরের মধ্যেই দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

নতুনভাবে আগুনে ঘি ঢালার মতো সিদ্ধান্ত হিসেবে কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে আসার ঘোষণাকেই দেখছেন তারা। এমন সিদ্ধান্তের কারণে খাদ্যশস্যের সরবরাহ সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে। ফলে আবারো আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠতে পারে বলে হুঁশিয়ারি করেছে আন্তর্জাতিক মহল।

বিশ্লেষকরা জানান, গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে অতীতের যেকোনো সময়ের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার অব্যাহত বাড়াতে থাকলে বাজার নিম্নমুখী হতে শুরু করে। কিন্তু রাশিয়ার খাদ্যশস্য রফতানি চুক্তি থেকে সরে আসার কারণে বাজার পরিস্থিতি আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ