পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব সিভিল সোসাইট অর্গানাইজেশনস্ ফর ডিজাস্টার রিডাকশন-জিএনডিআর।

জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আরো সক্ষম করে তুলতে এ প্রতিষ্টানের যাত্রা শুরু হলো। এর মধ্যে দিয়ে জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্কটির সঙ্গে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।

বুধবার (৮ আগষ্ট) একশনএইড বাংলাদেশ ও ব্র্যাক-এর আয়োজনে গুলশানের একটি কনভেনশন সেন্টারে জিএনডিআর-এর উদ্ধোধন করা হয়। এসময় জলবায়ু ও দুর্যোগ নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজকেরা জানান, ২০০৭ সাল থেকে জলবায়ু ও দুর্যোগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক এই নেটওয়ার্কটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ততের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে।

১৩৭টি দেশের ৮৫০টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক জিএনডিআর। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক যাত্রার মধ্য দিয়ে দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আগামীতে টেকসই কাজে ভূমিকা রাখবে নেটওয়ার্কটি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের ৫০টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই নেটওর্য়াকের সদস্য হয়ে কাজ শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানে জিএনডিআর-এর চেয়ারম্যান একশনএইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘সুশীল সমাজের এই নেটওয়ার্কটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধনে কাজ করবে।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করবে নেটওয়ার্কটি। নীতি প্রবর্তন বা সংযুক্তির ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে আন্তর্জাতিক এই প্ল্যাটফর্ম। যাতে দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে আনা যায়।

তিনি জানান, বাংলাদেশে এখন প্রতিবছর নানা দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও এখন স্পষ্ট। সেখানে গবেষণা, জ্ঞান এবং তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে মানুষের পাশে থাকাটা জরুরি। জিএনডিআর সেই কাজটিই করবে।

জিএনডিআর এর ধারণাপত্রে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে প্রাকৃতিকসহ নানা দুর্যোগ দিন দিন বাড়ছেই। আর এই দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সঠিকভাবে না করতে পারলে বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এমন প্রেক্ষাপটে জিএনডিআর দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারণ, জিএনডিআর-এর লক্ষ্য হলো দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের জন্য এমন একটি জগৎ তৈরি করা যেখানে দুর্বল জনগোষ্ঠী দুর্যোগ প্রস্ততি নিতে, বিপর্যয় এড়াতে, পুনরূদ্ধার করতে, ঝুঁকি এবং একটি পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে খাপ খাওয়াতে সক্ষম হয়।

এই নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নীতি ও অনুশীলনের উপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের প্রভাব বৃদ্ধিতে কাজ করছে। একই সঙ্গে সুশীল সমাজের একাত্ম হবার ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি করে নতুন জ্ঞান অর্জন এবং ব্যবহার করে জলবায়ু পরির্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলা করতে কাজ করছে সংগঠনটি।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের ৫০টি প্রতিষ্ঠান এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশে জিএনডিআর উদ্বোধনের পর জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলার কাজ আরো শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন আলোচকর।

জিএনডিআর-এর বাংলাদেশের সমন্বয়ক তানজির হোসেন বলেন, “এই নেটওয়ার্কটি বাংলাদেশের জলবায়ু ও দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্কের মত আন্তর্জাতিক লক্ষ্য সামনে নিয়ে কাজ করছে।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তির জ্ঞানের বিকাশের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করবে নেটওয়ার্কটি ”।

ব্র্যাক এর হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স ও ক্লাইমেট চেইঞ্জ বিভাগের প্রধান শশাঙ্ক সাদি বলেন “তরুণদের মধ্যে দুর্যোগ সহনশীল দেশ গড়ার চিন্তা-ভাবনা গড়ার জন্য এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে শিক্ষকদেরও যুক্ত করতে হবে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ তৈরি হবে। সরকার, গবেষক, উন্নয়নসহযোগী বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সমন্বয়ে জিএনডিআর কাজ করবে।

একশন এইড’র বাংলাদেশ, ডেপুটি ম্যানেজার (কমিউনিকেশন) মো. শরিফুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।