দেশের উপকূলে সনাক্তকৃত সবুজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশের উপকূলে সনাক্তকৃত সবুজ, বাদামি, লাল রঙের ১০ সীউইডে মিলবে বৈদেশিক মুদ্রা। এছাড়া দেশের বাজারেও রয়েছে বাণিজ্যিক গুরুত্ব।

দেশের সমুদ্র উপকূলে সনাক্ত করা গেছে ১১৭ প্রজাতির সীউইড বা শৈবাল। এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে অধিক গুরুত্ব সম্পন্ন সীউইড ১০ প্রজাতির সী উইডের দেখা মিলছে।



বাঙ্গালদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (BFRI) কর্তৃক “উপকূলীয় মৎস্যসম্পদের টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থাপনঃ এসডিজি প্রেক্ষিত”শীর্ষক সেমিনারে গবেষকরা এসব তথ্য তুলে ধরেছেন।

তারা জানান, প্রায় বাংলাদেশের সমপরিমান সমুদ্রাঞ্চল অর্জনের পর মিঠপানির পাশাপাশি উপকূলীয় এবং সমুদ্রসম্পদেও আমাদের পূর্ণ নজর দিতে হবে এবং মৎস্য ও জলজসম্পদের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিতি ছিলেন মৎস্য ও প্রানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশের মাছের উৎপাদন ৪২.৭৭ লক্ষ মে.টন হলেও বিস্তীর্ণ উপকূলীয় সুন্দরবনের চিংড়ি ও কাঁকড়া উৎপাদনের পরিমান মাত্র ২.৮৪ লক্ষ মে.টন।

আর ১১৮,৮১৩ বর্গ কিলোমিটার বিশিষ্ট আমাডেড় সামুদ্রিক জলসীমায় সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন মাত্র ৬.৫৫ লক্ষ মে.টন, যা মাছের মোট উৎপাদনের ১৫.৩১%।  তাই তুলনামূলকভাবে অধিক স্বাস্থ্যসম্মত সামুদ্রিক মাছ ও সি-উডের ব্যাপক চাষাবাদ এখন সময়ে দাবি।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর গবেষকরা বলেন, সমুদ্রোপকূলে সনাক্তকৃত সীউইডের ১১৭টি মধ্যে বৈদেশিক মূদ্রার্জনযোগ্য সবুজ, বাদামি ও লালরঙ্গের ১০টি সীউইড বা শৈবাল বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন।

খাদ্য হিসেবে সমুদ্র-শৈবালের বিভিন্নরকম ব্যবহারের কথাও জানান তারা। তারা উল্লেখ করে বলেন, গবেষণাগারে উপকূলীয় দুষ্প্রাপ্য চিত্রা, দাতিনা  ও কাইন মাগুরমাছের প্রজননক্ষম ব্রুড লালন করা হচ্ছে।

গলদা ও বাগদা চিংড়ির পাশাপাশি গবেষণায় অধিক উৎপাদনযোগ্য হরিণাচিংড়ির উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ২,৫০০ কেজি পাওয়া গেছে এবং তাদের বেঁচে থাকার হার  ৮০%। এমনকি তিনমাসে চাকাচিংড়ির গড় ওজন ১৩ গ্রাম পাওয়া গেছে, যা বাজারজাতকরণের উপোযোগী।

এদিকে বক্তারা বাঁকখালী নদীর মোহনায় পানির উপরভিাগে ভাসমান অবস্থায় প্রতি র্বগকলিোমটিারে ২০ হাজাররেও বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে বলেও একটি ভয়াবহ তুলে ধরেন।

মহেশখালী, টেকনাফ ও শাহপরীর দ্বীপ থেকে সংগৃহীত অপরিশোধিত লবণে কেজিতে  প্রায় ১০০০টি এবং বাণজ্যিকি পরিশোধিত লবণে প্রতিকেজিতে পাওয়া গেছে ৭০০ থেকে ৯০০টি মাইক্রোপ্লাস্টিক। লাবণী পয়ন্টে সমুদ্রসৈকত ও উখয়িা-রামুর সংযোগস্থল কাঁকড়া বিচেও প্লাস্টিক-দূষণরে মাত্রা কক্সবাজার শহরের তুলনায় তিনগুণের বেশি।

কাঁকড়া বিচজুড়ে নদীর মোহনায় হওয়ায় এ নদীর র্দীঘপথ দিয়ে নেমে আসা বিশাল এলাকার প্লাস্টিক-র্বজ্য বঙ্গোপসাগররে সাথে মিলিত হচ্ছে, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ্।

মৎস্য প্রতিমন্ত্রী এশিয়ার মধ্যে সেরা একটি উন্নতদেশে পরিণত করতে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রানিসম্পদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরকারি-বেসরকারি গবেষকদের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

এর আগে তিনি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের ক্রয়কৃত ৩টি ফ্রিজিং-ভ্যানের চাবি সংস্থার চেয়াররম্যান দিলদার আহমদের নিকট হস্তান্তর করেন। এসব ভ্যানের মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের আহরিত মাছ ঢাকায় বাজারজাত করা হবে।

দেশের উপকূলে সনাক্তকৃত সবুজ, বাদামি, লাল রঙের ১০ সীউইডে মিলবে বৈদিশিক মুদ্রা সংবাদটি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার (পিআরও) মোঃ শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান।

আরও পড়ুন: মৎস্য মেলায় রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড এ্যাকুরিয়ামে প্রবেশমূল্যে অর্ধেক ছাড়