প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই নিরাপদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই নিরাপদ খাদ্যে সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। নিরাপদ খাদ্যের উপর আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তারা।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০) বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেইফ ফুড (বিএসএসএফ) আয়োজিত সুস্থ্য জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্যের উপর আর্ন্তজাতিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দিনব্যাপি ঢাকা, ফার্মগেট সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীসহ নিরাপদ খাদ্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে সম্মেলনের উদ্দেশ্যে হিসেবে জানানো হয়, সুস্থ্য জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভ্যালু চেইন গড়ে তুলতে, বৈজ্ঞানিক উপায়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, আইনি সহায়তা গ্রহণসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নিরাপদ খাদ্য সংশ্লিষ্ট একাধিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য উপস্থাপন কর হয। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. দাতিন পাডুকা সেটিয়া দাতো ড. আইনি আইডেরিস, মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর, ইউনিভারসিটি পুত্রা মালয়েশিয়া, মালয়েশিয়া।

মুল প্রবন্ধে তিনি খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার বিভিন্ন মাধ্যম ও তা থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে বিষদভাবে বর্ণনা করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য বিস্তারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য সোসাইটির পক্ষ থেকে বার্ষিক সম্মাননা প্রদান করা হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ অনুষদের ফিসারিজ টেননোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. একেএম নওসাদ আলমকে।

সম্মেলনে ৬৩টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। দেশ বিদেশ থেকে ২৫০ সদস্য সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন।

সম্মেলনে নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির বিভিন্ন দিক ও একাধিক চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় অর্থায়নসহ ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা, জনবল বৃদ্ধি ও তাদের কাঙ্খিত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতের বিষয়ে জোর দেয়া হয়।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার, এই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও সচেতন আমাদের সবার।

তারা বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা নানাভাবে খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে। পাশাপাশি নানা ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের ফলে আমাদের মাটি, পানি ও বাতাস দূষিত হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা ঝুকির মধ্যে রয়েছে।

এ সময়ে তারা খাদ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত জনশক্তি ও মন্ত্রণালয়সমুহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক বড় এক চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেইফ ফুড’র সভাপতি ড. রফিকুল, সম্পাদক কেএইচএম নাজমুল

সম্মেলন শেষে কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এসবের মধ্যে রয়েছে নিরাপদ খাদ্য চক্র নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে সর্বক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য গবেষণা জোরদার করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।

‘খাদ্যমান মনিটরিং’ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ’গড়ে তুলতে হবে। নিরাপদ খাদ্যে অর্থায়ন বৃদ্ধির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসার জন্য সম্মেলনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।