নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি মাসের শুরু থেকেই বাজারে আমদানি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। আমদানি বেশি হওয়ায় দফায় দফায় মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। অপরদিকে করোনায় লোকসানে পড়া খামারিদের ক্ষতি পুষাতে বাড়ছে ডিমের দাম।

কিছুদিন আগে প্রতিকেজি ব্রয়লার ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তা এখন ১২০ টাকায় নেমে এসেছে। প্রতি এক’শ লাল বাদামি ডিম ৭৮০ টাকা থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ৮২০ টাকা এবং ৬৯০ টাকা থেকে বেড়ে সাদা ডিম ৭২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্য ডিমের দাম বাড়ায় ভোক্তাদের ক্ষোভ বাড়লেও।ব্রয়লার মুরগির দামে তারা এখন স্বস্তি প্রকাশ করছেন।

করোনায় ডিম ও মুরগি উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের জন্য এ দামের প্রভাব সম্পর্কে জানান রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলছে, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে লাখ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছেন খামারিরা। তবে বর্তমানে দাম বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। পোল্ট্রি মুরগির দাম প্রথমে বাড়ার কারণ, করোনায় হ্যাচারিগুলো বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেইসাথে অনেক বাচ্চা মাটিতে পুঁতে ফেলেন। অনেকে ফঁজি সংকটে বাচ্চা না কিনে খামার বন্ধ করে দিয়েছিলেন। প্রায় ৫৬ থেকে ৭০ শতাংশ খামার বন্ধ করায বাজারে মাংসের যোগান কমে যায়।ফলে বাড়তে থাকে ব্রয়লার মুরগির দাম।

এদিকে পর্যাপ্ত ক্রেতা না পাওয়ায় পোল্ট্রি মুরগির দাম বাড়ছে না বলে জানিয়েছে রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী রেজাউল করিম মিঠু।

এই ব্যবসায়ী এগ্রিকয়োর২৪.কমকে জানান, করোনায় রাজশাহীতে শিক্ষার্থী নাই। মেসগুলো ফাঁকা। আগেও একই পরিমান মুরগি বাজারে আসতো কিন্তু সবগুলো বিক্রি হয়ে যেতো। আর এখন ক্রেতা নাই, বিক্রি নাই। সারাদিন বসে থেকে কোনমতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা। বাজারে পোল্ট্রি মুরগি ১২০ টাকা, লেয়ার ২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকা, কক মুরগি ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। স্কুল কলেজের ছাত্ররা ফিরলে দাম আরো বাড়বে আশা করছি।

ডিম ব্যবসায়ী বাদলা এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, লাল বাদামি ডিম ৭৮০ টাকা দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে প্রতি এক’শ ডিমের দাম ৮২০ টাকা এবং সাদা ডিম ৭২০ টাকা, দেশি মুরগির প্রতি হালি ৪ টি ডিমের দাম ৫৫ টাকা দওে বিক্রি করছি।

রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, এখন বন্ধ হয়ে থাকা খামারগুলো বেশিরভাগই চালু হয়েছে। মাংস উৎপাদনের কারণে পোল্ট্রির কেজি ১০০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। তাছাড়া রাজশাহীর কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ হয় মূলত শিক্ষার্থী দিয়ে। ক্রেতা হিসেবে বাজার ধরে রাখে তাঁরাই।

তিনি আরো বলেন, ডিমের দাম আরো বাড়তে পারে। লেয়ার মুরগি প্রায় ১৮ থেকে ২০ মাসের একটা দীর্ঘ প্রজেক্ট। দাম কমলেও মুরগি বিক্রি করতে পারেন না তারা। লোকসান দিয়ে খামার ধওে রাখতে হয়। এখন লেয়ারের বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে না তেমন, খামার বন্ধ। ফলে ডিমের বাজার আরো বাড়বে এত সন্দেহ নেই।