পুষ্টি ও স্বাস্থ্য বার্তা ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: স্বাস্থ্য সচেতন মানুষেরা অলিভ ওয়েলের ব্যবহার করেন। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এই তেল খাওয়ার পরামর্শও দেন চিকিৎসকরা। রূপচর্চায় অলিভ অয়েলের ৬ আশ্চর্য ব্যবহার সম্পর্কে জানব:-

রূপচর্চায় অলিভ অয়েলের ৬ আশ্চর্য ব্যবহার:-

স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে
ত্বকের স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে গোসলের আগে পুরো শরীরে ম্যাসাজ করুন অলিভ অয়েল।

নাইট ক্রিম হিসেবে
রাতে ঘুমানোর আগে অল্প অলিভ অয়েলে তুলা ভিজিয়ে আলতো করে ম্যাসাজ করুন ত্বকে। খুব সামান্য লাগাবেন। ত্বক নরম থাকবে।

ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে
ত্বক পরিষ্কার করার পর মুছে হালকা করে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করুন। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বক রাখবে নরম ও কোমল। এছাড়া মেকআপ ব্যবহারের আগে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক প্রাণবন্ত থাকবে।

ত্বক উজ্জ্বল করতে
কালচে দাগ দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করতে অলিভ অয়েলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

চুলের যত্নে
চুল মজবুত ও ঝলমলে করতে অলিভ অয়েল হালকা গরম করে চুলে ব্যবহার করুন। গরম তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এরপর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।

নখ মজবুত করতে
ভঙ্গুর নখের যত্নে অতুলনীয় অলিভ অয়েল। কুসুম গরম অলিভ অয়েল নখে ম্যাসাজ করুন নিয়মিত। সহজে ভাঙবে না নখ।

 এছাড়াও শরীরের খারাপ এলডিএল কোলেস্টেরলকে জারণ থেকে রক্ষা করে অলিভ অয়েল। রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগ থেকে বাঁচায় অলিভ অয়েলে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জলপাই তেল গ্রহণের ফলে রক্তচাপের ওষুধের প্রয়োজনীয়তা ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

যদিও অলিভ অয়েল ওজন বৃদ্ধি বা কমার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তবে ৭ হাজার স্প্যানিশ কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর ১ মাস গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণে জলপাই তেল খেয়েও তাদের ওজন বাড়েনি। অন্যদিকে ১৮৭ জনের উপর ৩ বছর মেয়াদী এক গবেষণায় দেখা গেছে, জলপাই তেল সমৃদ্ধ খাবার রক্তে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়ায়, যা ওজন কমার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

৪০ বছরের পর থেকে অনেকেই আলঝেইমার রোগে ভুগে থাকেন। এক্ষত্রে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সবকিছু ভুলতে শুরু করেন। অলিভ অয়েল আলঝেইমার রোগের সঙ্গে লড়াই করে। আলঝেইমার রোগটি বিশ্বের সর্বাধিক নিউরোডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডার। এই রোগ হলে মস্তিষ্কের কোষের ভেতরে তথাকথিত অ্যামাইলয়েড বিটা নামক একধরনের প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ে। ইঁদুরের উপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে জলপাই তেলে থাকা উপাদানসমূহ ক্ষতিকর অ্যামাইলয়েড বিটা বৃদ্ধির হার কমায়।

জলপাই তেল টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, অলিভ অয়েল রক্তে শর্করা ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ৪১৮ জন সুস্থ ব্যক্তির উপর ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, নিয়মিত অলিভ অয়েল গ্রহণের ফলে তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমেছে।

 অলিভ অয়েলের গ্রহণের ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিও ঠেকানো যায়। কারণ এই তেলে অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। অলিভ অয়েলে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ফ্রি র‌্যাডিকেল ধ্বংস করে। যা ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, জলপাই তেলের যৌগগুলো ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।

রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। বিশেষ করে বয়স হলে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায়। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলো একটি অটোইমিউন রোগ। জলপাই তেলে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমূহ আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি দেয়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অলিভ অয়েল ও ফিশ অয়েল জয়েন্ট এবং বাতজনিত রোগী থেকে মুক্তি দেয়।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ