আন্তর্জাতিক কৃষি ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি মৌসুমে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েল উত্পাদন কমার আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভোজ্যতেলের বাজার আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭০ হাজার টনে পৌঁছতে পারে। গত বছর রফতানির পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার টন। সে হিসাবে রফতানি ৩১ লাখ ১০ হাজার টন কমতে পারে। দেশটির পাম অয়েল ফান্ডের (বিপিবিপিকেএস) প্রধান নির্বাহী এডি আব্দুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এপ্রিলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপরিশোধিত পাম অয়েল ও পরিশোধিত পণ্যের রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্বের শীর্ষ উত্পাদক এই দেশ। উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা। কারণ ওই সময় পণ্যটির দাম রেকর্ড সর্বোচ্চে অবস্থান করছিল। এদিকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই বাজার নিয়ন্ত্রণে এলে দেশটি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়। কিন্তু এর পরও নেতিবাচক প্রভাব রয়ে যায় রফতানিতে। পুরো বছরের রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে এ বিষয়কেই দায়ী করা হচ্ছে।

এগ্রিকেয়ার২৪.কমের আরোও নিউজ পড়তে পারেন:

চলতি মাসে সর্বনিম্ন দামে বিক্রি পাম অয়েল

ফের অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে পাম অয়েলের বাজার

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশে কমেছে পাম অয়েল মজুদ

চীনে ২৫ লাখ টন পাম অয়েল বিক্রি করবে ইন্দোনেশিয়া

পণ্যটির রফতানি বাড়াতে সম্প্রতি ডমিস্টিক মার্কেট অবলিগেশনসহ (ডিএমও) সব ধরনের বিধিনিষেধ শিথিল করেছে ইন্দোনেশিয়া। এতে চলতি বছর কমলেও আগামী বছর রফতানি বেড়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ টন থেকে ৩ কোটি ৮০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে মনে করছে পাম অয়েল ফান্ড।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিলেও পাম অয়েল রফতানিতে গতি ফেরেনি। ডিএমও নীতিমালার প্রতিবন্ধকতার কারণে ব্যবসায়ীরা রফতানিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। বর্তমানে দেশটিতে পাম অয়েল ও পাম ফলের মজুদ আকাশচুম্বী। মজুদাগারে নষ্ট হচ্ছে এসব পণ্য। সমস্যা সমাধানে এরই মধ্যে সব ধরনের পাম অয়েল পণ্যের রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ইন্দোনেশিয়া। চলতি মাসের শেষ নাগাদ এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

এতে ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েল উত্পাদন কমার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া পাম অয়েল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় চাষীরা উত্পাদন কমিয়ে দেন, যা পুরো বছরের উত্পাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে উন্নত সার ব্যবহারের অভাবও উত্পাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ইন্দোনেশিয়ায় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টন পাম অয়েল উত্পাদন হতে পারে।

পাম থেকে ভোজ্যতেল ও অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি বায়োডিজেলও উত্পাদন করে ইন্দোনেশিয়া। পাম অয়েল ফান্ডের দেয়া তথ্য বলছে, চলতি বছর দেশটিতে পাম বায়োডিজেলের ব্যবহার দাঁড়াবে ১ কোটি ৬ লাখ কিলোলিটারে। গত বছর ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৯২ লাখ ৯০ হাজার কিলোলিটার। সে হিসাবে ব্যবহার ১৩ লাখ ১০ হাজার কিলোলিটার বাড়বে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ