ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: তাল বৃহত্তর পাম জাতীয় দীর্ঘজীবী উদ্ভিদ। কাণ্ড সরল, উন্নত, গোলাকৃতি। কাণ্ডের মাথায় গুচ্ছবদ্ধ পাতা যার অধিকাংশ ঊর্ধ্বমূখী থাকে। তাল খেজুর র্গােছর মতো। স্ত্রী পুরুষ আলাদা গাছ, যা প্রস্ফুটনের সময় ছাড়া আলাদা করা যায় না। গ্রীস্মকাল তাল পাকার সময়। তবে কিছু কিছু গাছ সারা বছরই ফলন দিয়ে থাকে।

আসুন জেনে নিই তালের ঔষধি গুণাগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে:

ঔষধি গুণাগুণ :
১.তালের রস আমাশয় নিরাময়, মূত্র প্রবাহ বৃদ্ধিকারক এবং পেটের পীড়া/প্রদাহ, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরসনে সহায়ক।
২. তালের রস সেবনে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে, ক্লান্তি দূর করে, দেহে শক্তি যোগায় এবং অনিদ্রা দূর করে।
৩. শিশু ও বয়স্কদের মহৌষধ হিসাবে কাজ করে এ ফলের রস।
৪. যকৃতের পীড়া ও পিত্ত পাথর ক্ষয়রোধ করে নিয়ন্ত্রণ করে।
৫.তালের রস থেকে মিছরি তৈরি করা হয়, যা শিশুদের সর্দি-কাশি ভালো করে।

আরও পড়ুন: ড্রাগন ফলের ৭টি উপকারিতা

উপকারিতা :
কাঁচা পাকা তাল প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য জনজীবনে অতিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটা তাল গাছ কমপক্ষে ৬০-৭০ বছর বেঁচে থাকে। গাছ পরিপক্বতা পেলে কাঠের ব্যবহারও এ থেকে হয়ে থাকে। বাঁশ কাঠের বিপরীতে দরিদ্র পরিবারগুলো তালের গাছের পাতা ও কা-কে ঘরবাড়ি তৈরিতে ব্যবহার করতে পারে।

বন্যা ও বর্ষার সময় ডিঙি নৌকা বানিয়ে পথ পারাপার হয়। জ্বালানি হিসাবে ১ নম্বর লাকড়ি ধরে গ্রামগঞ্জে বেশি ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন কালে যখন কাগজের ব্যবহার ছিল না তখন তালের পাতাকে কাগজ হিসাবে ব্যবহার করে লেখাপড়া শিখতো মানুষ।

আরও পড়ুন: যেসব ফল গরমে ক্লান্তি দূর করে

তালের পাতা দিয়ে হাত পাখা তৈরি করলে তা ৩ বছর স্থায়ীভাবে ব্যবহার করা যায়। মহিলারা নকশার কাজে তাল পাতা ব্যবহার করে। তালের ফুল ও কচি ফল থেকে যে রস পাওয়া যায় তা অত্যন্ত সুস্বাদু পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তালের রস থেকে গুড় তৈরি করা হয়। এই গুড়ের চাহিদা বাজারে ব্যাপক।

তালের ঘন রস অর্থাৎ পাকা তালের রস হরেক রকম পিঠা, পায়েশ, হালুয়ার কাজে এবং বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে খাদ্যসামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তালের বীজ মাটিতে ফেলে রাখলে ৫ থেকে ৬ সপ্তাহ পরে শাঁস তৈরি হয়। এই শাঁস সকল মানুষের প্রিয় খাদ্য। বৃহত্তর ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কুমিল্লা, রাজশাহী, যশোর, সাতক্ষীরা, শেরপুর, জামালপুর সব জেলাতেই এর উৎপাদন হয়ে থাকে।

জেনে নিন তালের ঔষধি গুণাগুণ ও উপকারিতা শিরোনামে লেখাটি লিখেছেন ইউসুফ আলী মণ্ডল, সাংবাদিক, নকলা, শেরপুর। লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি