ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৩ গ্রামের ২০ টি খামারে অজানা রোগে ১৬ হাজার মুরগি মারা গেছে। এ অজানা রোগে মৃত মুরগির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য বরিশাল গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন।

গত দুই দিনে ( বৃহস্পতিবার, শুক্রবার) ইল্লা, ডুমুরিয়া ও কমলাপুর গ্রামের খামারে এসব মুরগি মারা যায়। রবিবার (১৭ মে, ২০২০) দুপুরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুরগির খামার পরিদর্শন করেন। তিনি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বরিশাল গবেষণাগারে পাঠিয়েছেন।

অজানা রোগে মারা গেলো ১৬ হাজার মুরগি শিরোনামের সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন পত্রিকা থেকে।

উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে ছোট-বড় শতাধিক পোল্ট্রি মুরগির খামার রয়েছে। তার মধ্যে ৬০ থেকে ৭০টি রয়েছে সোনালি মুরগির খামার। যার মধ্যে অধিকাংশ খামার ওই তিন গ্রামে।

ইল্লা গ্রামের খামারি লিপি বেগম জানান, অসুস্থ স্বামী ফরিদ হাওলাদার ও তিন সন্তান নিয়ে তিনি ভাড়া থাকেন। স্থানীয় ডিলার শংকর তফাদারের কাছ থেকে বাকিতে চার হাজার সোনালি মুরগির বাচ্চা ও খাবার এনে দুটি খামারে লালন পালন করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে মুরগি বিক্রির সময় হলেও তা বিক্রি করতে পারেননি। বর্তমানে প্রতিটি মুরগি এক কেজির ওপরে ওজন হয়েছে। শনিবার সকালে খাবার দিতে গিয়ে দেখতে পান খামারের অধিকাংশ মুরগি মরে রয়েছে। বাকি মুরগিগুলোর শরীর কাঁপছে এবং মুখ দিয়ে পানি পড়ছে। এভাবে দুই থেকে তিন মিনিট পর আক্রান্ত মুরগি কাঁপতে কাঁপতে মারা যাচ্ছে।

একই গ্রামের খামারি শহীদ হাওলাদার বলেন, ‘ধার-দেনা ও ডিলারের কাছ থেকে বাকিতে ঈদে বিক্রির লাখ টাকায় পাঁচটি খামারে সাত হাজার মুরগি পালন করি। গত দুই দিনে আমার ছয় হাজার মুরগি মারা যায়। বাকি এক হাজার মুরগি নামে মাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিয়েছি।’

ইল্লা গ্রামের খামারি নাজমুল ঘরামি বলেন, ‘আমার খামারের মুরগি মরা শুরু করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালেও কোনও চিকিৎসক খামারে আসেননি।’

স্থানীয় ডিলার ও খামারি শংকর তফাদার বলেন, ‘আমার বাড়িতে ব্যক্তিগত তিনটি খামারে এক কেজি ওজনের প্রায় ছয় হাজার সোনালি মুরগি ছিল। তার মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি মারা গেছে। এছাড়া অনেক খামারে ৩০ লাখ টাকার উপরে বাকিতে বাচ্চা ও খাবার সরবরাহ করেছি। এছাড়া মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনে আমার সরবরাহ করা কোম্পানি পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানদে চাইলে গৌরনদী প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মাছুম বিল্লাহ ডাক্তার না যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে রবিবার অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত তিনটি গ্রামের মুরগির খামারগুলো পরিদর্শন করি। খামারিদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। প্রতি খামার থেকে মরা মুরগির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য বরিশাল গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর অসুস্থ মুরগির প্রয়োজনী চিকিৎসা দেওয়া হবে।’

আরোও পড়ুন: রাতে পুকুরে বিষ প্রয়োগে ১০ লাখ পাঙ্গাস পোনা নিধন